Thursday, October 1, 2009

হার্ভার্ড সাহেবের কাল জুতা


হার্ভার্ড সাহেবের কাল জুতা
হার্ভার্ড বিশহবিদ্দালয় এর সামনে জনাব হার্ভার্ড  সাহেব এর এক্ টী মুর্তি  আছে।মাথা সমান উচু একটা বেদির উপর হার্ভার্ড  সাহেভ বসে আছেন একটা  চেয়ারে । নিপাট ভদ্রলোক।হাতে খোলা বই।মনে হয় কোন বিস্য়  নিয়ে চিন্তা করছেন ।ব্রঞ্জের তৈরি পুরা অবয়ব টা কালের বিবর্তনে (১৮৮৪), কালো হয়ে গেছে।সবকিছুই সাভাবিক।  মযার বেপার হলো ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে তার বাম জুতার সামনের অংশটুকু সোনার মত চকচক করছে। ব্যপার টা কি? চকচক যদি করতেই হয় মাথা করবে, জুতা কেন?তাও আবার পুরা জুতা না সুধু বাম জুতার সামনের অংশ। মজার অভিজ্ঞতার কথা বলার আগে মুর্তি টা সম্পরকে বলা উচিত।
হার্ভার্ড বিশহবিদ্দালয় বিশের ১ নম্বর বিশহবিদ্দালয় গত কয়েক বছ্রর যাবত। সুধু তাই না যেখানে তালিকার অন্ন  বিশবিদ্দাল্যয়ের মধ্যা পয়েন্ট এর ব্যব্ধআন ১ থেকে ২ এর মধেয়, সেখানে প্রতিবছর ১ নম্বর(হার্ভার্ড বিশহবিদ্দালয় ) থেকে  ২ নম্বর এর ব্যবধান ২৫ এর বেশি।৩৮ জন নবেল বিজয়ী তাদের নবেল প্রাপ্তির সময় বা আগে হার্ভার্ড এর সাথে জড়িত ছিলেন ।যাদের মধ্যে আছেন আমাদের পরিচিত অমরত্য  সেন। সুধু কি তাই, এখান থেকে পাশ করে বের  হওয়া  ৪৬ জন গ্রাজুয়েট পরে নবেল বিজয়ি হন ।   ইমিগ্রেশনের কড়া চেহারার কঠিন মানুসগুলো ও হাসি মুখে স্মমান দেখানোর চেস্তা করে, হার্ভার্ড এর সারটিফিকেট দেখলে।
তো এরকম এক নম্বর বিশহবিদ্দালয় এর সামনে  ১৮৮৪ সালে স্তাপিত  জন হার্ভার্ড সাহেবের মুর্তি ।যার আরেক নাম হল (Statue of Three Lies) “তিন মিথ্যার  মুর্তি” । কেন? কারন হল, বেদিতে লেখা তিন তথ্য, জন হার্ভার্ড (John Harvard), প্রতিস্থাতা (Founder),১৬৩৮(1838), যার, তিন টাই মিথ্যা।
প্রথম মিথ্যা হল, মুর্তির উনি জন হার্ভার্ড নন, কারন মরনকালে জন হার্ভার্ড কোন ছবি রেখে জাননি, তো কি আর করা,  মুর্তি গড়ার সময় ডেনিয়েল চেস্তার ফ্রেঞ্ছ উনার এক বন্ধু(কারো মতে একজন ছাত্রকে) মডেল হিসাবে ব্যভহার করেন।তবে  জন হার্ভার্ড  যখখার (TB, টী,বি) রোগি ছিলেন, সে কথা মাথায় রেখে উনার পা দুটিকে চিকন রাখা হয়।  
দিতিয় মিথ্যা হল, উনি  হার্ভার্ড বিশহবিদ্দালয় প্রতিস্তা করেন নি,এটা প্রতিস্তা করেন শ্তানিয়  মাসাচুয়েট কলোনি যেটা পরে  জন হার্ভার্ড এর নামে করা হয়।
তিন ন্মবর মিথ্যা হল স্তাপিত হয় ১৬৩৬ সালে, ১৬৩৮ সালে নয়।
২০০৫, আমেরিকাতে আমার প্রথম আসা।টুরিস্ট হিসাবে ৬ মাস থাকার অনুমতি পেলাম। ইন্টারনেট এ খুজতে খুজতে পেয়ে গেলাম আমার সপ্ন পুরনের হাতছানি।প্রথম সুযোগ এলো হার্ভার্ড এ যাওয়ার।  ইনফেকসাস ডিজিজের উপর একটা ৩ দিনের কোরস। ইচ্ছাতো অনেক, বাধাও অনেক।প্রথম বাধা হলো রেজিস্ত্রেসন ফি, ৩দিনের কোরস, ফি হলো ৬৫০ ডলার, তারপর হোটেল থাকা, খাওয়ার খরচ তো আছেই। আমার জন্য বোনাস?(বারতি) খরচ হলো যাতায়াত খরচ। তখন আমি  ফ্লোরিডা্য, তো ফ্লোরিডা থেকে বোস্টন যেতে প্লেনেই প্রায় তিন ঘন্টা লাগে।আমি তখন আমি এম,পি,এইচ(MPH) শেস করে বেলজিয়াম থেকে সরাসরি আসছি আমেরিকা। নিউ ইয়রক পরযন্ত আসতেই মোটামুটি হাত খালি, নিউ ইয়রক থেকে ফ্লোরিডা আসতে আসতে,মঞ্জু মামার কাছে ১৫০ ডলার ধার।কিন্তু মন তো মানেনা। কথায় বলে ইছা থাকলে নাকি উপায় হয়।আল্লাহ সহায় হলেন আরেকবার।এগিয়ে এলেন ফ্লোরিডার ওপেল ভাই।ফ্লোরিডাতে উনার বাসাতেই থাকি।ওপেল ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে রেজিস্ত্রেসন ফি দেয়া হলো,কাটা হলো প্লেনের টিকিট। সাথে বারতি দিলেন ওখানকার খরচ। আমাদের দেশের জন্য কিছু ওপেল ভাই দরকার।সত্যি দরকার। অবশেসে যাত্রার দিন হাজির। বিশাল এক অনুভুতি নিয়ে রওয়ানা হলাম।ওপেল ভাই এয়ারপোর্ট এ নামিয়ে দিয়ে গেলেন।সিকিউরিটি চেকিং শেশে বসে আছি ১২নম্বর গেটের সামনে প্লেনের অপেখখায়।আমেরিকাতে আসার পর সবকিছুতেই অবাক হতাম কিন্তু ১২ নম্বর গেটের সামনে বসে যা দেখলাম তাতে অন্যরকম অবাক হলাম।দেখি ১৩ নম্বর কোন গেট নেই। ১২ এর প্র সরাসরি ১৪ নম্বর গেট ।মাযে  ১৩ নম্বর  নেই।নেই কারন ১৩ নম্বর হলো আনলাকি(?) নাম্বার। বিংশ শতাব্দির অস্মভবের সম্ভাভনার যুগে,আমেরিকার জনগন ১৩ নম্বর কে ভয় পায়(!), অভিশপ্ত ভাবে(!), এড়িয়ে চলে(!)। তো আতঙ্ক এড়াতেই ১২ এর প্র ১৪। সারাজিবন জেনে আসলাম আমরা ডেভেলপিং দেশের মানুস, আমরা অশিখখিত, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, সেটা হয়ত বহুলাংশে ঠিক, কিন্তু এটাকে কি বলবো? কিন্তু যে দেশের মানুশ ৪০ বছর আগে চাদের বুকে পা রেখেছে, যে দেশকে আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রপথিক ভেবে এসেছি, সে দেশের মানুশ কি করে ১৩ কে ভয় পায়? এতটাই যে একটা আন্তরজাতিক বিমানবন্দর এ ১৩ নাম্বার কোন গেট ই নাই? যাহোক অবশেশে বোস্টন শহরে পৌছালাম রাত তখন ১১টার বেশি।মেট্রো থেকে নামার পর একজন ভদ্রলোক দিলেন এক মহামুল্যবান তথ্য, তা হলো পাসেই এক ইয়থ হস্টেল আছে, যেখানে ২০/২৫ডলারে সিট পাওয়া যাবে.২ঘন্টা ঘুরেও হস্টেল পেলাম না, বাধ্য হয়ে একটা মাযারি হটেলে উঠলাম ১৩০ডলার ভারায়।পরের দিন আবশ্য হস্টেল খুজে পেয়েছিলাম।এক রুমের মধ্যে ৫/৬টা বানক বেড, মানে, নিচে একজন উপরে একজন।আমার বেডটা ছিল  আবার কমন মানে একই রুমে ছেলে মেয়ে থাকার ব্যবসথা।তিনটা দিন পার হলো কি ভাবে টের ই পেলাম না।সকালে ডুকতাম লেকচারে, মাযে লানচ  এর বিরতি তারপর আবার লেকচার।সব বড় বড় প্রফেশরদের সহজ ভাসায় জ্ঞ্যনগ্ররভ আলোচনা।আবার বলব, সহজ ভাসায় জ্ঞ্যনগ্ররভ আলোচনা।হার্ভার্ড এবং ফ্লোরিডাতে কয়েকটা কোর্স করার সুযোগ হয়েছিলো , সুযোগ হয়েছিলো এখানকার শিখখকদের কাছে আসার।  আমার  কাছে আমেরিকার ভালো দিক গুলার মধ্যে এটা অন্যতম প্রধান।এদের শেখানোর, জানানোর প্রচেস্টা/প্রক্রিয়া সারা দুনিয়া থেকে আলাদা, একেবারে দিন রাতের ব্যবধান ।মাসটার্স করার  সময় ইউরোপের শিখখকদের ও দেখেছি, কেমন যেন এক্টা দুরত্ত থাকে, যেমন থাকে আমেদের শিখখকদের । কেমন যেন সহজ হতে পারা যায়না।কিন্তু এখানে? পার্থক্যটা সহজেই বোঝা যায়।
 কোর্স শেশের পরদিন গেলাম ক্যম্পাস দেখতে।যতই দেখি ততই মনের মাযে আফশোসটা বারতেই থাকে, আহা যদি এখানকার ছাত্র হতে পারতাম।ঘুরতে ঘুরতে চলে আসলাম  হার্ভার্ড সাহেবের সাম্নে।তখনই নজরে আসলো জুতার ব্যাপারটা।বাম জুতার সাম্নের অংশ চকচকে।মুল ব্যাপার টা হলো, মুর্তি টা আছে মাথা সমান উচু বেদির উপর।তো সবাই যখন ছবি তুলছে, সাভাবিক ভাবেই সবাই চাচ্ছে হার্ভার্ড সাহেভের সংশপ্ররসে আসতে, কিন্তু বেদির উচ্চতার কারনে,হাত বারালেও, হার্ভার্ড সাহেবের স্প্ররস পাওয়া যাচ্ছে না একমাত্র বাম জুতার সাম্নের অংশ ছারা।কারন ওই অংশ টুকুই বেদির বাইরে বেরিয়ে আছে।তো সবাই বেদির সামনে দারাচ্ছে, হাত উপ্র তুলে জুতা ধরে ছবি তুলছে । নিয়ে যাচ্ছে স্মিতি হিসাবে।কিন্তু চিন্তাও করতে পারচ্ছেনা  এভাবে, দিনের প্র দিন, শত কোটি আঙ্গুলের ছোয়ায়, নিজের অজান্তেই দিনের ময়লা পরিস্কার করে দিচ্ছে কালো জুতার সাম্নের অংশ থেকে। হয়ে যাচ্ছে  চকচকে, আলাদা করে  তুলছে ধাতব মুর্তির (ব্রঞ্জের)  বাকি অংশ থেকে। যা ধরা ছোয়ার বাইরে,থাকার ফলে,সাভাবিক ভাবেই ময়লা পড়ে/ধাতব বিক্রিয়ায় কালচে আকার ধারন করেছে।
গত সপ্তাহে প্রসংগক্রমে এক ফেছবুকে ঘটনাটা বলার পর জনাব রাগিব হাসান আমার ভুল(?) সুধরে(?) দিলেন, উনি বল্লেন, এটা নাকি হার্ভার্ড এর লিজেন্ড্রি যে, হার্ভার্ড সাহেভের পা এর সর্প্স সৌভাগ্য আসে,তাই, পরিখখার আগে ছাত্ররা উনার পা পরিস্কার করে। হার্ভার্ড এর একজন প্রাক্তন ছাত্রকে লিজেন্ড্রি এবং পরিখখার আগে পা ছোয়ার/পরিস্কার  ব্যাপারে জিজ্ঞ্যাস করলে উনি অবশ্য কুটনৈতিক ভাবে সরাসরি উত্তর না দিয়ে, মযার তথ্যর জন্য দুজনকেই ধন্যবাদ দিলেন।পরে হার্ভার্ড এর ওয়েব সাইটে একটা ছবির নিচে যে বর্ননা পাওয়া গেলো “কিছু দর্শনার্থি  সৌভাগ্যের জন্য জন হার্ভার্ড এর জুতা সর্প্স করে”।  
যদিও আমি এখনও কঠোর ভাবে “সৌভাজ্ঞ্যের সাথে জুতার সর্প্স” এর মতের বিপখখে ।তারপরেও কে জানে?, হলেও হতে পারে!

সবশেশে বোস্টন শহরের ডাক ট্যুর (হাস ভ্রম্ন) এর কথা বলার লোভ সাম্লাতে পারছিনা। আমার দেখা এটাই একমাত্র উভচর গাড়ি যেটা বোস্টন শহরের রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে সোজা শহরের মায দিয়ে বয়ে চলা  নদিতে নেমে পড়ে। শুরু করে নৌ ভিহার।সাহস করে টিকিট কাটতে গিয়েও ফিরে এলাম,মন কে সান্তনা দিলাম,”ধার করে ভাত খাওয়া গেলেও ,পোলাও খাওয়া ঠিক না”।                                          
                                                        
Oct/ 01/2009 
drmahbub@hotmail.com 




       

No comments:

Post a Comment